সাম্প্রতিক বিশ্বসাহিত্য: আইনস্টাইন, শেক্সপিয়র, আঁদ্রে গ্লুক্সমাঁ, ফের্নান্দো ও বিয়োরো

আইনস্টাইনের প্রিয় শিল্পী আলেকজান্ডার ক্ল্যাডার

১৯৩৭ সাল, প্যারিসে অনুষ্ঠিত ওয়ার্ল্ড ফেয়ার পরিদর্শনের সময় হঠাৎ স্প্যানিশ প্যাভিলিয়নে চোখ আটকে যায় মহামতি আইনস্টাইনের। ঝারা ৪৫ মিনিট সেখানে ঠায় দাঁড়িয়ে থাকেন । কী দেখছিলেন তিনি? দেখছিলেন এক জীবন্ত ভাস্কর্য আর তার শৈল্পিক কর্মকৌশল। অসাধারণ ঐ ভাস্কর্যের শিল্পীর নাম আলেকজান্ডার ক্ল্যাডার। যিনি পরে আইনস্টাইনের প্রিয় শিল্পী হয়ে ওঠেন। যার প্রতিটি শিল্পকর্ম ছিল গতিময়তা, অধিবাস্তববাদ আর বিমূর্ততার প্রতীক। বিজ্ঞান আর শিল্প মিলেমিশে একাকার হয়েছিল ক্ল্যাডারের হাতের জাদুতে। ব্যতিক্রমী সচল প্রাণবন্ত ভাস্কর্যের জন্য বিশ্ববিখ্যাত আলেকজান্ডার ক্ল্যাডার। তাঁর শিল্পগুলি এমনভাবে ভারসাম্যপূর্ণ ও নির্দিষ্ট আকারে তৈরি যে, সেগুলো বায়ুস্রোত বা বাতাসের বৈদ্যুতিক স্পর্শে প্রতিক্রিয়া দেখায়। বিশেষ করে, তার দিয়ে তৈরি করা কাঠামোগুলি যেন শূণ্যে আঁকা ছবির মতন এক শৈল্পিক রঙ্গভূমি। তাই বলা হয়ে থাকে, আপনি যদি আইনস্টাইনের আপেক্ষিকতা-নীতি ভালবাসেন তাহলে ক্ল্যাডারের শিল্পকর্মও না ভালবেসে পারবেন না।

আলেকজান্ডার ক্ল্যাডারের জন্ম শিল্পী বাবা মায়ের ঘরেই। ১৮৯৮ সালে ২২ আগস্ট আমেরিকার পেনসিলভিনিয়ায়। বাবা ছিলেন ভাস্কর আর মা চিত্রশিল্পী । ব্যতিক্রমী কাজের জন্য ক্ল্যাডার ছিলেন তার সময়ের অগ্রদূত। মারা যান ১৯৭৬ সালে ১১ নভেম্বর নিউইয়র্কে । নানা রকম কাগজ, গৃহসামগ্রী, খেলনা, জুয়েলারি, সচল ও স্থির , তার দিয়ে তৈরি ভাস্কর্য, স্বারক, আঁকা ছবিসহ প্রায় ২২ হাজার বিস্ময়কর শিল্প রেখে গেছেন তিনি। এই মহান শিল্পীর স্মৃতির উদ্দেশে তার মৃত্যু দিবস এ মাসের এগার তারিখ থেকে লন্ডনের মডার্ন টেট আর্ট গ্যালারিতে শুরু হয়েছে প্রদর্শনী। ক্ল্যাডারের জীবনের বিভিন্ন সময়ে করা প্রায় একশ’র মতো শিল্পকর্ম এখানে প্রদর্শিত হচ্ছে। এই প্রদর্শনী চলবে আগামী বছরের এপ্রিল পর্যন্ত ।

একুশ শতকে শেক্সপিয়র: রাজার নতুন জামা

একুশ শতকের পাঠকের কাছে শেক্সপিয়রকে নতুন করে পরিচয় করিয়ে দিতে সব আয়োজনই সম্পন্ন করেছে ব্রিটিশ প্রকাশনী সংস্থা হোগার্থ। ২০১৬ সালে শেক্সপিয়রের ৪০০তম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষ্যে এই অভিনব উদ্যোগ । আমাদের মতো সাধারণ পাঠকের কাছে শেক্সপিয়র সম্ভবত তাঁর লেখা নাটকের জন্য বেশী প্রিয়। সেই কবেকার লেখা নাটকগুলি আজকের দিনেও তার আবেদন হারায়নি মোটেও। তার সেইসব নাটক অবলম্বনে সিরিজ আকারে কয়েকটি উপন্যাস প্রকাশ করতে যাচ্ছে হোগার্থ। বর্তমান আধুনিক পাঠকদের কথা মাথায় রেখেই কাজটি করেছেন সংস্থাটির প্রকাশক। সমকালীন লেখকদের মধ্যে এনি টেলর, জেনেট উইন্টারসন, মার্গারেট অ্যাটউড, হাওয়ার্ড জ্যকবসন, জো নিসবো , ফ্লিন, ট্রেসি চেয়াভিলায়ার– এদের সাথে কথা পাকাপাকি করেছে প্রকাশন সংস্থাটি ।

এই সিরিজের প্রথম প্রকাশিত উপন্যাসটি লিখেছেন সাহিত্যিক জেনেট উইন্টারসন। বছর দেড়েক আগে প্রকাশক তাকে বললেন, শেক্সপিয়রের নাটকগুলো থেকে যে কোনো একটিকে সাহিত্যরূপ দেবার জন্য বেছে নিতে। তিনি সবাইকে অবাক করে দিয়ে ‘দ্য উইন্টা ‘স টেল’-এর মতো মিলনান্তক কমেডি বেছে নিলেন। তা দেখে প্রকাশক খানিকটা চিন্তিত হয়েই জিজ্ঞেস করলেন তিনি আসলেই এটি করতে চান কি-না? উত্তরে উইন্টারসন মুচকি হেসে মাথা ঝাঁকালেন ।

উইন্টারসন হলেন বাছাইকৃত লেখকদের মধ্যে প্রথম যাকে হোগার্থ চুক্তিবদ্ধ করে এই রূপান্তরের কাজে। প্রথমে ভাবা হয়েছিল তিনি হয়তো ‘হেমলেট’, ‘ওথেলো’ বা ‘কিং লিয়ার’-এর মতো শেক্সপিয়ারের জনপ্রিয় কোনো নাটক বেছে নিবেন। কিন্ত তা না করে তিনি ‘দ্য উইন্টার’স টেল’-এর মতো নাটক পছন্দ করলেন। যা কিনা অনেকটা রহস্যময় ও দুর্বোধ্য। ‘দ্য উইন্টার’স টেল’-এর গল্পটি হলো:

‘ সিসিলির রাজা লিওন্টেস তাঁর সুন্দরী সতীসাধ্বী রানি হারমায়োনিকে নিয়ে সুখে দিন কাটাচ্ছিলেন। লিওন্টেস তাঁর এই মহতী রানিটিকে খুবই ভালবাসতেন। জীবনে তাঁর কিছুরই অভাব ছিল না। কেবল মাঝে মাঝে বাল্যবন্ধু তথা সহপাঠী বোহেমিয়ার রাজা পলিজেনাসকে আরেকবার দেখার এবং তাঁকে স্ত্রীর সামনে উপস্থিত করার ইচ্ছে জাগত লিওন্টেসের মনে। দু’জনে একসঙ্গে বড়ো হয়েছিলেন। পিতার মৃত্যুর পর উভয়কেই নিজ নিজ রাজ্যে ফিরে রাজকার্য হাতে তুলে নিতে হয়। তাই অনেকদিন তাঁদের মধ্যে দেখাসাক্ষাৎ ছিল না। অনেক অনুরোধের পর অবশেষে একদিন বোহেমিয়া থেকে সিসিলির রাজসভায় এসে লিওন্টেসের সঙ্গে দেখা করলেন পলিজেনাস। তাঁর আগমনে লিওন্টেস তো দারুণ খুশি হলেন। রানির সঙ্গে পরিচয় করিয়ে দিলেন ছেলেবেলার বন্ধুর। তাঁর সুখ যেন পূর্ণতা লাভ করল প্রিয় বন্ধুর মিলনে। এইভাবে বেশ কিছুদিন কাটিয়ে পলিজেনাস ঘরে ফেরার তোড়জোড় শুরু করলেন। তখন স্বামীর ইচ্ছানুসারে হারমায়োনি পলিজেনাসকে আরও কিছুদিন থেকে যেতে অনুরোধ করলেন। আর তারই ফলে ঘনিয়ে এল হারমায়োনির দুঃখের দিন। পলিজেনাসকে থেকে যেতে অনুরোধ করেছিলেন লিওন্টেসও। তাঁর অনুরোধ পলিজেনাস ফিরিয়ে দিলেও, হারমায়োনির মধুর বাক্যের উত্তরে না বলতে পারলেন না তিনি। যাত্রার দিন পিছিয়ে দিলেন আরও কিছুদিন। তার ফলে এক বেয়াড়া ঈর্ষা এসে জুটল। স্বামীর মন রাখতে পলিজেনাসের সেবাযত্নের ভার নিয়েছিলেন হারমায়োনি। অথচ রাজার ঈর্ষা তা দেখে বেড়েই চলল। রাজা তখন তাকে বিষ দিয়ে হত্যার পরিকল্পনা করেন। পলিজেনাস সে কথা জানতে পেরে তাঁর নিজের রাজ্য বোহেমিয়ায় ফিরে এলেন।

এদিকে পলিজেনাসের পলায়নের সংবাদ লিওন্টেসের ঈর্ষা আরও বাড়িয়ে তুলল। তিনি রানিকে নিক্ষেপ করলেন কারাগারে। কারাগারে রানি এক শিশুকন্যার জন্ম দিলেন। মেয়েটিকে রাজা মৃত্যুমুখে ফেলে দিলেন। কিন্তু সে ভাগ্যক্রমে বেঁচে যায়। রানি শিশুটিকে হারানোর দুঃখ সামলে উঠতে পারেননি। তিনি মারা যান বলে প্রচারিত হয়। সে দুঃখে তাঁর পুত্র সন্তানটিরও মৃত্যু হয়। পরবর্তীতে লিওন্টেস তাঁর ভুল বুঝতে পারেন। অনেক ঘটনার পর তাঁর হারানো মেয়ে পারডিটা ফিরে এল, ‘মৃত’ রানিও ফিরে পেলেন প্রাণ। নাটকের শেষ অঙ্কে পারডিটার সাথে পলিজেনাসের পুত্রের সাথে বিয়ে হয়।

উইন্টারসন মূল নাটকের স্বাতন্ত্র্য বজায় রেখেই লিখে ফেললেন তাঁর সাড়া জাগানো উপন্যাস ‘দ্য গ্যাপ অফ টাইম’ । গত অক্টোবরে হয়ে গেল এই বইয়ের মোড়ক উন্মোচন অনুষ্ঠান। শেক্সপিয়রের নাটকের মূল কাহিনী ও নির্যাষ বজায় রেখে কাহিনী বিস্তৃত করেছেন লন্ডন থেকে প্যারিস , নিউ অরল্যান্স পর্যন্ত। উপন্যাসের প্রধান চরিত্র লিও লন্ডন শহরের একজন সফল ব্যাংকার। অভিজাত এবং ধোপদুরস্ত বস । পোরসে গাড়িতে চলাফেরা করেন। এবং সন্দেহবাতিকগ্রস্ত। সন্দেহ করেন, তাঁর গায়িকা স্ত্রী মিমির সাথে প্রণয় আছে তারই ঘনিষ্ঠ বন্ধুর। তিনি স্ত্রীকে প্রতারক ভাবেন। বৈবাহিক জীবন ও বন্ধুত্ব ধ্বংসের জন্য দায়ী করেন তাকে। স্ত্রীকে অনুসরণ ও নজর রাখবার জন্য এমনকি ওয়েব ক্যামেরাও ব্যবহার করেন। অনেকটা ‘দ্য উইন্টার’স টেল’ নাটকেরই ভালবাসা , হিংসা ও বিচ্ছেদের প্রতিরূপ। তবে নাটকের হারানো শিশু কন্যা পারডিটাকে ঘিরে উপন্যাসের কাহিনীতে চমৎকারিত্ব এনেছেন অনেক। এই আধুনিক উপন্যাসের মধ্য দিয়ে এ যুগের পাঠক শেক্সপিয়রের সেযুগের নাটকের অনেক রহস্য ও প্রশ্নের উত্তর পাবেন। নাটকে বিদ্যমান অংকের মতোই উপন্যাসের গতি প্রবাহিত হয়েছে।

এদিকে কানাডার প্রখ্যাত ঔপন্যাসিক,কবি ও সমালোচক মার্গারেট অ্যাটউড ‘দ্য টেম্পেস্ট’ নির্বাচন করেছেন। তিনি বলেন, “‘দ্য টেম্পেস্ট’ সবসময়ই আমার প্রিয়। এটা নিয়ে কাজ করা আমার জন্য সত্যি একটি বিরাট চ্যালেঞ্জ”। এখন দেখার বিষয়, জাদু আর বিভ্রমের এই খেলাকে অ্যাটউড কিভাবে উপন্যাসে রূপ দেন। আর এর জন্য আমাদের অপেক্ষা করতে হবে আরও কিছুদিন।

বলা যায়, হোগার্থের এই আয়োজনের মধ্য দিয়ে একুশ শতকের পাঠকদের জন্য শেক্সপিয়রকে নতুন করে জানার ক্ষেত্র তৈরি হলো। এখানে এসে মনে পড়ে যাচ্ছে ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর অনূদিত শেক্সপিয়ারের ‘দ্য কমেডি অফ এরস’ অবলম্বনে ‘ভ্রান্তিবিলাস’ অথবা ‘ টেমিং অফ দ্য শ্রু’-এর বাংলা নাট্যরূপ মুনীর চৌধুরীর ‘মুখরা রমণী বশীকরণ’-এর কথা। ঠিক সেভাবেই বর্তমান সময়ের আধুনিক পাঠক হিসেবে অপেক্ষা করতেই পারি বাকী নাটকগুলো অবলম্বনে অন্য লেখকদের নতুন বইয়ের জন্য।

চলে গেলেন ডিফেন্ডার অব ফেইথ

দীর্ঘ দিন ক্যান্সারের সাথে লড়াই করে অবশেষে ফ্রান্সের প্যারিসে গত ১০ নভেম্বর শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করলেন দার্শনিক আঁদ্রে গ্লুক্সমাঁ। ফরাসী নতুন দার্শনিকদের মধ্যে অন্যতম ও সেই সময়ে সবচেয়ে আলোচিত এই দার্শনিকের মৃত্যুর সময় বয়স হয়েছিল ৭৮ বছর। বিভিন্ন ধরনের ক্যান্সারের সাথে লড়ছিলেন তিনি। তাই ২০১১ সালের পর থেকে তাকে আর জনসমক্ষে তেমন দেখা যায় নি। গত শতাব্দীর সত্তরের দশকে ফ্রান্সে মার্ক্সবাদী ও কট্টর বামপন্থী হিসেবে পরিচিত একদল দার্শনিক ও বুদ্ধিজীবী তাদের মতবাদ পাল্টে হয়ে যান মার্ক্স ও কমিনিউজম বিরোধী । পাসকাল ব্রুকনার, বারনার্ড অরি লেভি, জাঁ-মারি, ক্রিশ্চিয়ান জামবেট–এদের সাথে আঁদ্রে গ্লুক্সমাঁও ছিলেন। তাঁরা জাঁ পল সাত্রে, পোস্ট স্ট্রাকচারালিস্ট, একই সাথে ফ্রেডরিখ নীটশে ও মার্টিন হাইডেগার-এর কঠোর সমালোচক ছিলেন। ১৯৬৮ সাল থেকেই গ্লুক্সমাঁ মার্কসবিরোধী লেখালেখি শুরু করনে। তিনি মনে করতেন, মার্কসবাদ অনেকটা সর্বগ্রাসী নাৎসিজমের মতোই সমান্তরাল পথ অনুসরন করে। তবে ভিয়েতানাম যুদ্ধের বছরগুলিতে তিনি ভিয়েতনামের জনগণের পক্ষে তাঁর অবস্থান ঘোষণা করেন। সে সময় থেকেই তিনি জাতীয়ভাবে প্রভাবশালী হতে শুরু করেন। তিনি রুশ পররাষ্ট্রনীতির ঘোর সমালোচক ছিলেন। আবার আফগানিস্তান এবং ইরাকের সামরিক পদক্ষেপের পক্ষেও ছিলেন। সাম্প্রতিককালে ইসলামী সন্ত্রাসবাদকে তিনি পশ্চিমের সাথে পিছিয়ে থাকা ইসলামের সভ্যতার দ্বন্দ্ব হিসেবে আখ্যায়িত করেন। তিনি বলতেন, “ইসলামী জঙ্গীদের প্রথম শিকার মুসলামানরাই। এবং মুসলমান দ্বারাই কত মুসলমান মারা যাচ্ছে তার হিসাব মুসলমানরাই রাখে না। পশ্চিমাদের দোষ দেয়ার আগে তাই ইসলামের নেতাদেরই শিক্ষা আর সচেতনতা বাড়াতে হবে”। গত শতাব্দীর পৃথিবীতে ঘটে যাওয়া প্রায় সব ধরনের রাজনৈতিক উত্থান পতন ও মতাদর্শের সাথে বুদ্ধিবৃত্তিকভাবে জড়িত ছিলেন এই ফরাসী দার্শনিক।

ফের্নান্দো দেল পাসোর সের্বান্তেস জয়

৮০ বছর বয়সী মেহিকোর আরেক লেখক এবার পেয়েছেন স্প্যানিশ ভাষার সর্বোচ্চ পুরস্কার ‘প্রেমিও দে মিগেল সের্বান্তেস’। গত তিরিশ বছরে এই পুরস্কারের পাঁচজনই ছিলেন মেহিকোর(অক্তাবিও পাস-১৯৮১, কার্লোস ফুয়েন্তেস-১৯৮৭, সের্হিও পিতল-২০০৫, হোসে এমিলিও পাচেকো-২০০৯ এলেনা পোনিয়াতৌস্কা-২০১৩)।

পুরস্কার ঘোষণার দিন সকাল সাড়ে ছয়টার দিকে মেয়ে পাউলিনা ফোন করে বললেন:

আব্বু, তোমার আরেকটা বই লেখা উচিৎ।

কেন রে ?

আনন্দে কেঁদে ফেলে মেয়ে জানালেন, কারণ তোমাকে প্রেমিও সের্বান্তেস পুরস্কার দেয়া হয়েছে।

১ লাখ ২৫ হাজার ইউরো মূল্যমানের এই পুরস্কারের বিজয়ী লেখক ফের্নান্দো একধারে কবি, ঔপন্যাসিক, গল্পকার ও প্রাবন্ধিক। তাঁর বিখ্যাত গ্রন্থগুলোর কয়েকটি হচ্ছে:

উপন্যাস: হোসে ত্রিগো (১৯৬৭), পালিনুরো দে মেহিকো (১৯৭৭), নোতিসিয়েরো দেল ইমপেরিয়ো( ১৯৮৭)

কাব্যগ্রন্থ: সনেতোস দে লো দিয়ারিও (১৯৫৮), দে লা আ আ লা সেতা (১৯৮৮), পালেতা দে দিয়েস কলোরেস (১৯৯০), কাস্তিইয়োস এন এল আইরে (২০০২)

নাটক: লা লোকা দে মিরামার ( ১৯৮৮), লা মুয়ের্তে সে বা আ গ্রানাদা (১৯৯৮)

গল্পগ্রন্থ: কুয়েন্তোস দেসপের্সোস (১৯৯৯)

প্রবন্ধ গ্রন্থ: মেমোরিয়া ই অলবিদো, বিদা দে হুয়ান হোসে আররে্ওলা(১৯৯৪)

বিয়াহে আলরেদেদোর ডি এল কিহোতে (২০০৪)

বাহো লা সম্ব্রা দে লা ইস্তোরিয়া, এনসাইয়ো সব্রে এল ইসলাম ই এল হুদাইসলো( ২০১১)

হুয়ান বিয়োরো পেলেন এমিলিও পাচেকো পুরস্কার

গোটা লাতিন আমেরিকায় ফুটবল-প্রেমিকদের কাছে হুয়ান বিয়োরো পরিচিত ফুটবল-বিষয়ক লেখালেখির জন্য। স্প্যানিশ ভাষায় লিখিত Dios es Redondo( গোলাকার ঈশ্বর) তাকে বিপুল খ্যাতি এনে দেয়। কিন্তু বিয়োরোর আসল পরিচয় কথাসাহিত্যিক হিসেবে। কার্লোস ফুয়েন্তেস এবং হুলিও অর্তেগার সম্পাদনায় ‘ভিন্টেজ বুক অব লাতিন আমেরিকান স্টোরিজ’ নামে যে ইংরেজি সংকলনটি বেরিয়েছিল তাতে সর্বশেষ গল্পটিই ছিলো ১৯৫৬ সালের ২৪ সেপ্টেম্বরে জন্ম নেয়া হুয়ান বিয়োরোর। সুতরাং স্প্যানিশ এবং ইংরেজীভাষী পাঠকদের কাছে তার মূল পরিচয় কথাসাহিত্যিক হিসেবেই। এরই স্বীকৃতি হিসেবে কয়েকদিন আগেই পেলেন মেহিকোর ‘প্রেমিও একসেলেনসিয়া দে লাস লেত্রাস হোসে এমিলিও পাচেকো’ পুরস্কার। এর আগে এই পুরস্কার পেয়েছিলেন মেহিকোর অন্য দুই বিখ্যাত লেখক: এলেনা পোনিয়াতৌস্কা এবং ফের্নান্দো দেল পাসো।

(নিউ ইয়র্কার, দি গার্ডিয়ান, দি টাইমস, এল পাইস পত্রিকার তথ্যাশ্রয়ে রচিত)

আর্টস বিভাগে প্রকাশিত বিপাশা চক্রবর্তীর আরও লেখা:

জীবন ও মৃত্যুর সঙ্গম: অর্ধনারীশ্বর অথবা তৃতীয় প্রকৃতি

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Shopping Cart