মার্কিন কবি ইউসেফ কমুনিয়াকা(৬৯)। মার্কিন কবিতার ইতিহাসে একটি পরিচিত ও শ্রদ্ধেয় নাম। প্রথম পুরুষ কৃষ্ণাঙ্গ আমেরিকান কবি যিনি পুলিতজার পুরস্কার পেয়েছেন। জন্ম নিয়েছিলেন আমেরিকার লুইসিয়ানা প্রদেশে । বাবা ছিলেন ছুতোর মিস্ত্রি। ভাষার শক্তি সম্পর্কে কমুনিয়াকা প্রথম ধারণা পান দাদা দাদীর কাছ থেকে। তারা চার্চে প্রায়ই ওল্ড টেস্টামেন থেকে স্তবক আবৃত্তি করতেন, এভাবে কবিতার সাথে পরিচয় হয় ইউসেফ কমুনিয়াকার। তাঁর কবিতার প্রতিটি অক্ষর আফ্রিকা, ভিয়েতেনামের কথা বলে। সেসময় মার্কিন সমরনীতির কারণে তাঁকে ভিয়েতনাম যুদ্ধে যেতে হয়েছিল। ইউসেফ বর্তমানে নিউইয়র্ক ইউনিভার্সিটিতে অধ্যাপনার সঙ্গে যুক্ত আছেন। এখানে তাঁর বিখ্যাত একটি কবিতার বাংলা অনুবাদ প্রকাশ করা হলো। অনুবাদ করেছেন প্রাবন্ধিক বিপাশা চক্রবর্তী।
মোকাবেলা
আমার কালো মুখ ঝাপসা হয়ে আসে
কালো গ্রানাইট পাথরের ভেতর লুকায়
আমি বলেছিলাম,না আমি লুকাব না
আরে শালা! আর কান্না নয়
আমি শিলাখন্ড, আমি মাংস পিন্ড
আমার মেঘে ঢাকা প্রতিবিম্ব শিকারী পাখির মতো আমাকে দেখছে ।
রাত্রির মুখ যেন হেলান দিয়ে দাঁড়িয়েছে সকালের শরীরে।
আমি ঘুরে দাঁড়াই এদিকে-
শিলাখন্ড আমাকে যেতে দেয়
আমি ঘুরে দাঁড়াই ওদিকে
আমি আবার ভেতরে এসে পড়ি
ভিয়েতনাম ভেটরেন মেমোরিয়ালে
আলোতে ভর করে ভিন্নতা সৃষ্টিতে
আটান্ন হাজার বাইশটা নাম পার হয়ে যাই
কিছুটা ভেবে খুঁজি
ধোঁয়ার অক্ষরে আমার নিজের নাম
আমি স্পর্শ করে দেখি নামটি এন্ড্রু জনসন
আমি দেখি যুদ্ধের বোকা ফাঁদ, শাদা আলোর ঝলকানি
নামগুলো কাঁপে এক নারীর ঢিলা বহির্বাসে
কিন্তু সেই নারী যখন হেঁটে চলে যায়
নামগুলো থেকে যায় দেয়ালে ।
তুলির আঁচড় চলে। লাল পাখির ডানা আমার জলন্ত দৃষ্টি ঘোলা করে দেয়।
আকাশ। আকাশে এক বিমান।
যুদ্ধফেরত এক শ্বেতাঙ্গের মুখ ভেসে যায়
ভেসে আসে আমার খুব কাছে ,
তারপর তার ম্লান চোখ
আমার চোখ দিয়ে দেখে।
আমি এক জানালা।
সে হারিয়েছে তার ডান হাত
পাথরের ভেতর। কালো আয়নায় এক নারী
মুছে দিতে চাইছে নাম
না, সে এক বালকের চুল আঁচড়ে চলছে।