Portrait of a girl, previously thought to represent Sappho the ancient Greek poetess, with tablets and pen, She is also known as Meditation. Italy. Roman. c 75 AD. Pompeii. (Photo by Werner Forman/Universal Images Group/Getty Images)
একালের ‘ফিফটি শেডস অব গ্রে’-এর আগে এই নারীরা এক নতুন অঞ্চলের মানচিত্র এঁকেছিলেন। যারা প্রচন্ড আত্মবিশ্বাসের সাথে নির্ভয়ে যৌনতা নিয়ে লিখেছেন। আমরা আজকের নারীরা এখনো নিজেদের প্রজনন অধিকারের কিংবা সমান উত্তারাধিকারের জন্য লড়াই চালিয়ে যাচ্ছি। কিন্তু এই লেখিকারা আমাদের মনে করিয়ে দেন,আমাদের যুদ্ধের সারমর্মটা যা আমাদের যৌনতার আনন্দ, স্বপ্ন, কল্পনার স্বাদ গ্রহণের স্বাধীনতার দিকে নিয়ে যায়। যা আমাদের নিজেদের শরীরকে নিজেরাই নিয়ন্ত্রণের কথা বলে। এবং নারী-পুরুষ লিঙ্গ নির্বিশেষে যার যার ইচ্ছা, যার যার নিজস্বতা অনুযায়ী নিজের যৌন জীবন বেছে নিতে পারার স্বাধীনতা অর্জনের কথা বলে।
স্যাফো
স্যাফোকে প্রাচীনকালের অন্যতম সেরা গ্রীক গীতিকবি হিসেবে বিবেচনা করা হয়। খুব সম্ভবত খ্রীষ্টপূর্ব ৬২০’এর কাছাকাছি সময়ে জন্ম নিয়েছিলেন। অল্পই জানা যায় তাঁর জীবন সম্পর্কে । কিন্তু আমরা তাঁর লেখা কবিতা থেকে এমন কিছু অনুভূতি জড়ো করতে পারি যা দিয়ে তিনি কেমন ছিলেন বোঝা যায়। তাঁর কবিতাগুলি নারী পুরুষ দুই লিঙ্গের প্রতিই ভালবাসা প্রকাশ করেছিলো। তাঁর জন্মস্থান দ্বীপ লেসবোস থেকেই লেসবিয়ান শব্দটির সৃষ্টি ।সাফিক ( “sapphic”) শব্দটির উৎপত্তিও তাঁর নাম থেকেই। তাঁর সৃষ্টিকর্মের মূল আকর্ষণ ছিল ব্যক্তিগত আবেগ, আত্মগত অভিজ্ঞতা যা তাঁর কবিতার ক্রমবিকাশে প্রভাব বিস্তার করেছিল। তাঁর কবিতা প্রাচীন যুগে অধিকাংশ সময়ে সুপরিচিত এবং আদৃত হলেও এখন তার অধিকাংশই হারিয়ে গেছে; অবশ্য টিকে থাকা সামান্য কিছু কাব্যাংশের মাধ্যমেই তাঁর অপরিমেয় সুখ্যাতি বজায় আছে। যেমন “fragment 31” কবিতার কিছু অংশ যা এখনো পাওয়া যায়, যা আবার পরবর্তীকালে অনেক কবি দ্বারাই সংশোধিত বা পুনর্লিখিত হয়েছে। এটিই তাঁর সেরা কবিতা হিসেবে বিখ্যাত। ‘পোয়েম অব জেলাসি’ নামে এটি পরিচিত। এটি বর্ণনা করে প্রেম ও গভীর আকাঙ্ক্ষার শারীরিক লক্ষনগুলো। যখন কবি তাঁর প্রিয়তম পুরুষটিকে অন্য মানুষের সঙ্গে কথা বলতে দেখেন।
স্যাফোর’ কবিতার কয়েকটি পঙক্তি-
যখন আমি তোমাকে এক ঝলক দেখি / আমি বোবা হয়ে যাই/ আমার জিহ্বা ভেঙ্গে পড়ে/ এক নিগূঢ় বহ্নি শিখা আঁচড় কাটে আমার শরীরে/ আমি অন্ধ হয়ে যাই।
ড্যাফনি দ্যু মারিয়েই
ঔপন্যাসিক ও নাট্যকার ড্যাফনি দ্যু মারিয়েই’এর জন্ম ১৯০৭ সালে, লন্ডনে।
যদিও তাকে ভালোবাসার উপন্যাসের রচয়িতা বলে শ্রেণিভুক্ত করা হয়, তার গল্পগুলোতে খুব কম সময়েই শুভ সমাপ্তি দেখা যায যা অস্বাভাবিক আবহ সম্পন্ন “বিষন্ন এবং স্পন্দনশীল” হিসেবে বর্ণিত হয়েছে। বহুলবিক্রিত কাজগুলো প্রথমদিকে সমালোচকদের কাছে গুরুত্বপূর্ণ মনে হয় নি, কিন্তু সেগুলো শুরু থেকে তার গল্প বলার শৈলীর জন্য প্রশংসা কুড়িয়েছে। ১৯৩৮ সালে লেখা ‘রেবেকা’ বইটি ছিল ভৌতিক রহস্য আর রোমাঞ্চে ভরপুর আদিম এক উপাখ্যান। এই ক্লাসিক উপন্যাসে, আমাদের নায়িকা সুদর্শন এক বিপত্নীক পুরুষের অকস্মাৎ পাণি প্রার্থনায় দুম করে প্রেমে পড়ে যান। বিয়ের পর গল্পের নায়িকা যখন তাঁর স্বামীর সুবিশাল জমিদারীতে আসেন,অনুভব করেন তার স্বামীর পূর্বের মৃত স্ত্রীর এক বিরাট অপচ্ছায়া তাদের জীবনকে গ্রাস করে নিচ্ছ যা কিনা তাদের দাম্পত্য জীবনের জন্য সম্ভাব্য হুমকি রূপে ধরা দেয়। রহস্য গোপনীয়তায় ভরপুর এই ক্লাসিকে যৌনতা সর্বদা খোলাখুলিভাবে প্রকাশিত না হলেও বিরাজ করেছে শক্তিশালীরূপেই।
ড্যাফনি দ্যু মারিয়েই’এর সৃষ্টিকর্মের অনেকগুলো থেকেই সাফল্যের সাথে চলচ্চিত্র নির্মাণ করা হয়েছে । “রেবেকা’ উপন্যাসটি প্রথমে সাদাকালোয় ১৯৪০ সালে তারপর ২০২০ সালে নেটফ্লিক্সে নতুন করে নির্মিত হয়। এছাড়াও রয়েছে “মাই কাজিন রেচেল’ ও “জ্যামাইকা ইন” এবং ছোটগল্প “দ্য বার্ডস” ও “ডোন্ট লুক নাও, আফটার মিডনাইট”।
রেবেকা উপন্যাস থেকে কয়েক লাইন:
“এই মখমলে তাকে দেখতে সুন্দর লাগছিল। এটি তোমার মুখের সামনে ধরো। এটি তুলতুলে মসৃন, তাই না? এর সৌরভ এখনো তাজা,তাই নয় কি? তোমার অনেকটা এমন মনে হবে যে, সে এটি সবেমাত্র খুলে রেখেছে। আমি সবসময়ই অনুভব করতে পারতাম, কখন সে আমার আগে এই ঘরে ছিলো। ঘরটিতে তার এক ঝলক সৌরভ থাকত”।
দ্যু মারিয়েই তার জীবনের অধিকাংশ সময় কর্নওয়াল-এ কাটিয়েছেন, যেখানে তার লেখা সিংহভাগ কাহিনীই সংঘটিত হয়েছে। তার লেখা উপন্যাসগুলো যতই সুনাম বয়ে আনতে থাকে, তিনি ততই নিজেকে মানুষের কাছ থেকে গুটিয়ে নিতে থাকেন।
কোলেত
১৮৭৩ সালে জন্মগ্রহণ করেন ফরাসী দার্শনিক কোলেত। সিডোনী- গ্যাব্রিয়েল কোলেত নামে যিনি বেশি পরিচিত। ১৯৪৪ সালে লেখা ছোট উপন্যাস ‘গিগি’র জন্য তিনি ব্যাপক খ্যাতি লাভ করেন। যেটি অবলম্বন করে পরে একটি ব্রডওয়ে নাটক হয় এবং সেখানে অড্রে হেপবার্ন অভিনয় করেন। গল্পের প্রধান চরিত্র একটি পারসিয়ান মেয়ে। মেয়েটির ক্যরিয়ার হয় গণিকাবৃত্তি। এই পেশার সূত্রে তাঁর সাথে সখ্য গড়ে ওঠে একজন ধনী ব্যক্তির সাথে। ঐ ব্যক্তি মেয়েটির প্রেমে পরে এবং অবশেষে তাকে তাঁর ভালোবাসার কথা জানান।
কোলেতের আরেকটি বিখ্যাত রচনা ছিল ‘চেরি’। এটি ছিল বার্ধক্যকে কেন্দ্র করে। সেখানে এক সময়ের বিখ্যাত গণিকা তার যৌন জীবনের শেষকালে এসে এক প্রগাঢ় প্রেমের পরিণতির মুখোমুখি হয়েছিলেন।
“আমার কি আলাদা রুম আছে? আমি কি তোমায় ভালোবাসি নি?”
মেয়েটি দ্বিধায় পড়ে গেল, সংশয়পূর্ণ এক চিলতে হাসি নিয়ে জিজ্ঞেস করল, “ফ্রেড, তুমি কি সেই ভালোবাসাকে অনুভব করো?”
“এর জন্য ভিন্ন কিছু ভাষা আছে, কিন্তু তুমি সেগুলির মর্ম উপলব্ধি করতে পারবে না”।
আনিস নিন
জীবনীকার আনিস নিন ১৯০৩ সালে জন্মগ্রহণ করেন। কামোদ্দীপক গল্পের লেখিকাদের মধ্যে তিনি ছিলেন অন্যতম সেরা। তিনিই ছিলেন প্রথম নারী যিনি এই ধরণের লেখার ক্ষেত্র পুরোপুরি উন্মুক্ত করেন। ৬০ বছরেরও বেশী সময় তিনি ডায়েরি লিখেছেন। তাঁর বয়স যখন ১১ বছর তখন থেকে ডায়েরি লিখতেন। সেখানে তার যৌন বোধন ও স্বাধীনতার বিবরণ পাওয়া যায়। ব্যক্তিগত সংগ্রহের জন্য ১৯৪০ এর দশকে তিনি কাল্পনিক কামোত্তেজক ছোট গল্পও লিখেছিলেন, যেটি পরে ডেল্টা অব ভেনাস এবং লিটল বার্ডস সংকলন হিসেবে প্রকাশিত হয়েছিল।
“সে যখন চোখ বন্ধ করল, তখন সে অনুভব করল পুরুষটির যেন অনেকগুলি হাত আছে। হাতগুলি তার শরীরের সর্বত্র স্পর্শ করছে। শুধু তাই-ই নয়, তার যেন অনেকগুলি মুখ, যা অতি দ্রুত তার সারা দেহে ঘুরে বেড়াচ্ছে। নেকড়ের মতো তীক্ষ্ণ দাঁত তার মাংসল অংশে ডুবে যাচ্ছে।
সে এখন নগ্ন। পুরুষটি তাঁর পূর্ণ দৈর্ঘতা নিয়ে তার উপর শুয়ে পড়ল। তাঁর দেহের ওজন মেয়েটি বেশ উপভোগ করল। ঠিক তেমনিভাবে তাঁর দেহের নীচে চূর্ণ হতেও তাঁর ভালো লাগছে। মেয়েটি চেয়েছিল তাঁর পা থেকে মুখ পর্যন্ত পুরুষটি লেগে থাকুক। তাঁর সমস্ত দেহে শিহরণে দুলছিল।”
উরসুলা কে. লি গুইন
আমেরিকান লেখক উরসুলা কে. লি গুইন ১৯২৯ সালে জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর লেখা ‘দ্য লেফট হ্যান্ড অব ডার্কনেস’ উপন্যাসে ভবিষ্যৎ ও কাল্পনিক জগতের য়ৌনতার ধারণা দিয়েছেন। ১৯৬৯ সালে প্রকাশিত এই বইটিতে গেথেনিয়ানস নামের একটি মানবিক-এলিয়েন জাতির গল্প বলা হয়েছে, যাদের কোন সহজাত লিঙ্গ নেই। পরিবর্তে, তাদের পুরুষ বা নারীদের যৌনাঙ্গ মাসিক চক্রে সক্রিয় হয়ে ওঠে এবং ক্রমাগত তাদের লিঙ্গান্তর ঘটে।
“একজন পুরুষ চায় তার বীরত্ব বা পুরুষত্বকে সবাই যেন মানে। তেমনি একজন নারী চায় সবাই যেন তার নারীত্বকে প্রশংসা করে। মানা এবং প্রশংসা করার ইঙ্গিতগুলি পরোক্ষ ও সূক্ষ্ম । এখানে একজন মানুষকে সম্মানিত ও মূল্যায়নের সূচকে বিচার করা হয়। এটি এক ভয়ঙ্কর অভিজ্ঞতা।”
এরিকা জং
মার্কিন লেখিকা এরিকা জং ১৯৭৩ সালে প্রকাশিত উপন্যাস ‘ফিয়ার অফ ফ্লাইং’-এর জন্য সর্বাধিক পরিচিত। উপন্যাসটি বিশেষভাবে নারীর যৌনতার প্রতি এর মনোভাবের জন্য বিতর্কিত। উপন্যাসে কথক তার স্বামী ছাড়াও অন্য পুরুষের সঙ্গে নানা কামজ কল্পনা চরিতার্থ করে। উপন্যাসে জং ‘জিপলেস ফাক’ শব্দ বা টার্মটি তৈরি করেছিলেন। “যা দুইজন অপরিচিত ব্যক্তির মধ্যে নিজের অজান্তে নিজেদের জন্যই যৌন মিলন স্থাপন করাকে বোঝায়। যেখানে কোন আবেগীয় সম্পৃক্ততা, প্রতিশ্রুতি বা ঘৃন্য উদ্দেশ্য কিংবা ভবিষ্যতের কোন পরিকল্পনা নেই। জিপলেস ফাক একেবারে খাঁটি। এটি অশুভ উদ্দেশ্য থেকে মুক্ত। কোন পাওয়ার গেম নেই। পুরুষ “নিচ্ছে না” এবং নারী “দিচ্ছে না”। কারো স্বামী প্রতারণা করছে না বা কারো স্ত্রীকে পটানোর চেষ্টা করছে না। কেউ কিছু প্রমাণ করার চেষ্টা করছে না বা কারো কাছ থেকে কিছু বের করার চেষ্টা করছে না। জিপলেস ফাক হল সবচেয়ে বিশুদ্ধতম সঙ্গম। এবং এটি ইউনিকর্নের চেয়ে বিরল। আর আমার জীবনে তা একবারের জন্যও ঘটেনি।”
ইনজবার্গ ডে
১৯৪০ সালে জন্মগ্রহণকারী, ইনজবার্গ ডে ছিলেন একজন অস্ট্রিয়ান-আমেরিকান লেখিকা, যিনি ১৯৭৮ সালে অর্ধ আত্মজীবনীমূলক স্মৃতিকথা ‘ 9½ উইকস’ ( সাড়ে নয় সপ্তাহ) লিখেছিলেন যা তিনি ছদ্মনাম এলিজাবেথ ম্যাকনিল নামে প্রকাশ করেছিলেন। পরে এটি কিম বাসিংজার এবং মিকি রুরক অভিনীত একটি চলচ্চিত্রে পরিণত হয়েছিল। পাতলা বইটি নির্লিপ্ত শান্তভঙ্গীতে বলা S & M স্যাডিজম এবং মাসোকিজম,অর্থাৎ ” ব্যথাকে যৌন উত্তেজক হিসাবে ব্যবহার করার অভ্যাস”-এর এক তীব্র, ঘনীভূত উপস্থাপনা । এটি এমন একটি জগত তৈরি করে যা একই সাথে মন্ত্রমুগ্ধকর এবং বিপজ্জনক।
” এই লোকটির আমার উপর যে ক্ষমতা ছিল সেখানে ভুল করার কিছু ছিল না। খুব ভালভাবে তৈরি চাবি দেওয়া খেলনার মতো, যেখানেই তিনি আমাকে রাখতেন আমি গতিতে চলে আসতাম”।
অ্যান রাইস
১৯৪১ সালে জন্ম গ্রহণকারী আমেরিকান লেখিকা অ্যানে রাইস সম্ভবত তার ‘ভ্যাম্পায়ার ক্রনিকলস’-এর জন্য সবচেয়ে বেশি পরিচিত। তবে তিনি ‘দ্য স্লিপিং বিউটি কোয়ার্টেট’ও লিখেছিলেন। এই সিরিজটির বেশিরভাগ ১৯৮০’র দশকে প্রকাশিত হয়েছিল। যা একই নামের রূপকথার উপর হালকাভাবে ভিত্তি করে মধ্যযুগীয় ফ্যান্টাসির জগতে নির্মিত কামোত্তেজক বিডিএসএম (BDSM) কাহিনী নিয়ে গঠিত। গল্পগুলিতে প্রধান চরিত্রে নারী এবং পুরুষ চরিত্রের যৌন দুঃসাহসিকতার সুস্পষ্ট বর্ণনা দেয়। যার মধ্যে উভকামিতা থেকে শুরু করে সঙ্গমে নারী আধিপত্যের দৃশ্যকল্প পর্যন্ত সবকিছু রয়েছে।
BDSM শব্দটা চারটে ইংরেজি শব্দের আদ্যক্ষর নিয়ে তৈরি হয়েছে। B অর্থে বন্ডেজ (Bondage) বা বাঁধন, D অর্থে ডমিন্যান্স (Dominance) বা আধিপত্যে, S অর্থে স্যাডিজম (Sadism) বা অন্যকে শারীরিকভাবে কষ্ট দেওয়া আর M অর্থে ম্যাসোকিজম (Masochism) বা নিজে শারীরিকভাবে কষ্ট পাওয়া।
“এটাই ছিল বাস্তব জগত – যখন অন্যরা চলে যাবার পর, বিউটি এবং আমি একে অপরের জন্য স্বাধীন হয়ে যেতাম । আমার শয়নকক্ষে শুধু আমরা দুজন, যেখানে আমি তার নগ্ন আত্মাকে আষ্টেপৃষ্ঠে জড়িয়ে ধরব উন্মথন আর অগ্নিপরীক্ষায় যা আমাদের অতীত অভিজ্ঞতা, আমাদের স্বপ্নকেও ছাড়িয়ে যাবে। তাকে আমার কাছ থেকে বাঁচানোর কেউ নেই। তার কাছ থেকে আমাকে বাঁচানোর কেউ নেই। আমার ক্রীতদাস, আমার ক্ষুদ্র অসহায় ক্রীতদাস …”
অক্টাভিয়া ই বাটলার
আমেরিকান লেখক অক্টাভিয়া ই বাটলার প্রথম কল্পবিজ্ঞান লেখক যিনি ম্যাকআর্থার ফেলোশিপ (“জিনিয়াস গ্রান্ট” নামেও পরিচিত) পেয়েছিলেন। তার ১৯৮৪ সালের ছোট গল্প “ব্লাডচাইল্ড” এ, তিনি মানুষ এবং এলিয়েনের মধ্যে প্রজনন ও বংশবিস্তারের জটিল গতিশীলতার চিত্র তুলে ধরেছেন। যেখানে ভিনগ্রহের প্রাণীর বিলুপ্তির মুখে টিকে থাকার একমাত্র সুযোগ হল তাদের লার্ভা পুরুষ বা মানব হোস্টের শরীরে রোপণ করা। এটি তার “গর্ভবতী পুরুষ” গল্প হিসাবেও পরিচিত। বাটলার তার বিস্তারিত লেখা থেকে ভিন্ন প্রজাতির দুই লিঙ্গের মধ্যকার যৌনমিলন এবং গর্ভাবস্থার জৈবিক প্রক্রিয়াগুলির বর্ণনা মুছে ফেলেছিলেন।
” সারা জীবন ধরে আমাকে বলা হয়েছিল এটি একটি ভাল এবং প্রয়োজনীয় জিনিস … এক বিশেষ ধরনের জন্মদান। আমি এখন পর্যন্ত এটা বিশ্বাস করেছিলাম … এটাই ছিল … সবচেয়ে খারাপ কিছু…। “
ক্যাথেরিন মিলেট
ফরাসি লেখক এবং শিল্প সমালোচক ক্যাথরিন মিলেট ২০০২ সালে স্মৃতিকথা ‘দ্য সেক্সুয়াল লাইফ অফ ক্যাথরিন এম’ লিখেছেন। যা তার যৌন জীবনের ইতিহাস, শৈশবে হস্তমৈথুন করা থেকে শুরু করে প্রাপ্তবয়স্ক হিসাবে গ্রুপ সেক্সের প্রতি তার আকর্ষণের বিবরণ দেয়। এখানে বর্ণনাকারী তার স্বাধীন ও সক্রিয় যৌন জীবনের বর্ণনা দিয়েছেন। বলেছেন ইতালির গ্রামাঞ্চলে আলফ্রেস্কো যৌন মিলন বা খোলা আকাশের নিচে প্রাকৃতিক পরিবেশে সঙ্গম থেকে শুরু করে প্যারিসের একটি রেস্তোরাঁয় হাই ক্লাস অর্গি হয়ে ওঠার গল্প।
” আমি আন্দ্রে’র কন্ঠস্বর শুনছি, বলছে তার বান্ধবী যেন কাছে এগিয়ে আসার সময় লজ্জা না পায়, এবং তার কন্ঠস্বরটা কিছুটা চাপা মনে হচ্ছিল কারণ ততক্ষনে আমার টি-শার্ট উপরে উঠে আমার মাথা ঢেকে ফেলেছে”।
তামারা ফেইথ বারগার
কানাডিয়ান লেখিকা তামারা ফেথ বারগার ২০১২ সালে বিভেদসৃষ্টিকারী এবং বিতর্কিত উপন্যাস ‘মেডেনহেড’ লিখেছিলেন। এতে, ১৬ বছর বয়সী প্রধান নারী চরিত্র মায়রা তার পরিবারের সাথে ফ্লোরিডায় ছুটি কাটাতে যায়, যেখানে তার প্রথম যৌনতার উপলব্ধি শুরু হয় যখন একজন বয়স্ক পুরুষ তার সামনে হস্তমৈথুন করার চেষ্টা করে। মায়রা তখন পর্নগ্রাফি খোঁজা শুরু করে এবং আবিষ্কার করে যে, সে ম্যাসোকিজম এবং দাস-মনিবের যৌনতার আনন্দ উপভোগ করছে।
“আমার লেখাগুলি যৌনসঙ্গম সম্পর্কে চিন্তার লক্ষ্যে বিকশিত হয়েছিল। আপনি হাজার বার ধর্ষিত হতে পারেন এবং এখনও কুমারী থাকতে পারেন। আমি একজন মনিবের দ্বারা যৌনসঙ্গম এবং একজন ক্রীতদাস হয়ে যৌনসঙ্গম সম্পর্কে লিখছিলাম”।
স্নাতক ডিগ্রী শেষ করার পর, তিনি পর্নোগ্রাফিক গল্পের লেখক হিসাবে কাজ করেছিলেন। তার থিমগুলির মধ্যে রয়েছে নারীর ইচ্ছা এবং যৌনতা, যা প্রায়শই অসঙ্গত পরিস্থিতির বর্ণনা করে। তার অনেক উপন্যাস শ্রেণী ও বর্ণ বৈষ্যমের সমস্যাগুলি অন্বেষণ করে।
Huffpost সাময়িকীতে প্রকাশিত ত্রিসিয়া তংকোর নিবন্ধ অবলম্বনে