বিখ্যাত লেখকদের বই পাঠের অভিজ্ঞতা

কিছু বই স্বাদ গ্রহণ করার জন্য, অন্যগুলো গিলে ফেলার জন্য এবং কোন কোনটি চিবিয়ে চিবিয়ে হজম করার জন্য;

লেখকরাও পাঠক। বিখ্যাত লেখকরা যখন পাঠের প্রতি তাদের ভালোবাসা নিয়ে আলোচনা করেন ব্যাপারটা উত্তেজিত হবার মতোই। প্রায় প্রত্যেক লেখক পড়ার মাধ্যমে তাদের জীবন যেভাবে পরিবর্তন হয়েছে তার বিস্তারিত বর্ণনা দিয়েই ক্ষান্ত হন। প্রিয় পাঠক, আপনাদের জন্য বিশ্বসাহিত্যের বিখ্যাত লেখকদের পড়া বিষয়ে সেইসব কথাগুলো আমি সন্ধান করেছি। মনোযোগ দিয়ে সেই কথাগুলোই এখানে উপস্থাপনের চেষ্টা করেছি। কারণ, আমার মনে হয় পড়ার প্রতি আমাদের মনোভাব আমাদের পৃথিবীকে দেখার দৃষ্টিভঙ্গিকে প্রকাশ করে।

অধিকাংশ বিখ্যাত লেখকরা যুক্তি দেন যে, আপনি না পড়ে লিখতে পারবেন না। লেখার জন্য পড়া অন্য যেকোন হাতিয়ারের মতোই গুরুত্বপূর্ণ। প্রিয় পাঠক, বিখ্যাত লেখকদের পাঠানুরাগের এক সংগ্রহ এখানে তুলে ধরা হলো।

ফ্রান্সিস বেকন’ এর পাঠ

কিছু বই স্বাদ গ্রহণ করার জন্য, অন্যগুলো গিলে ফেলার জন্য এবং কোন কোনটি চিবিয়ে চিবিয়ে হজম করার জন্য; আর কিছু বইয়ের শুধুমাত্র অংশবিশেষ পড়তে হয়, অন্যগুলো পড়তে হয়, কিন্তু কৌতূহলবশত নয়; এবং অল্প কিছু বই অধ্যবসায় ও মনোযোগসহকারে সম্পূর্ণ পড়তে হয়।

হেনরি ডেভিড থোরো

প্রথমেই সেরা বইগুলো পড়ে ফেলুন, নিশ্চিতভাবেই সেগুলি কখনো আপনার পড়ার সুযোগ নাও হতে পারে। আমাদের সবসময় শিশুদের মতো প্রশমিত এবং আমোদিত হবার প্রয়োজন নেই। কেউ সহজ উপন্যাস নিয়ে পরে থাকতে পারে, কারণ সে নির্জীব। তার একটু ঘুমিয়ে নেয়ার চেয়ে ভালো কিছু করার নেই। মহৎ চিন্তার সম্মুখভাগের দৃশ্যরূপটি তাদের দ্বারাই উপভোগ করা সম্ভব যারা এর পাশে দাঁড়ায় যখন চিন্তাগুলি আবির্ভূত হয়। যে-বইগুলি আমাদের কাপুরুষোচিত বিনোদন দেয় বা, কিন্তু যার প্রতিটি চিন্তাই বিস্ময়কর রকমের সাহসের। যে-বইগুলো একজন অলস মানুষ পড়তে পারে না, এবং যেগুলো একজন ভীতু মানুষকে আনন্দ দেয় না, যেগুলো আমাদের বিদ্যমান প্রতিষ্ঠানের জন্যও বিপজ্জনক করে তোলে, আমি সেগুলোকে ভালো বই বলি।

মার্সেল প্রুস্ত

পঠন আলাপচারিতার বিপরীত। যা গঠিত হয় আমাদের একাকী সময়ে অন্য চিন্তার সঙ্গে যোগাযোগ গ্রহণের জন্য। অন্যকথায়, নিঃসঙ্গতায় আমাদের শক্তিগুলিকে সক্রিয় করে তোলা যে কথামালার তাৎক্ষণিক বেগে নিষ্ক্রমণ ঘটে। ঐ সময়টা অনুপ্রেরণার জন্য থাকে। আমাদের আত্মা তখন স্বয়ং নিজের জন্য কঠিন ফলপ্রসূ শ্রমে নিয়োজিত।

রুডইয়ার্ড কিপলিং

আমরা যদি শব্দের প্রতি মনোযোগ না দেই, তাহলে আমরা সেই বিচ্ছিন্ন ভদ্রলোকের মতো হয়ে উঠতে পারি যে কিনা পূর্বের সমস্ত পরিকল্পনা উপেক্ষা করে পুরোনো লাইনের উপরেই নতুন চিরস্থায়ী গতি যন্ত্র আবিষ্কার করেন, তারপর অবাক হয়ে লক্ষ্য করেন এটি কাজ করছে না। যদি আমাদের সমস্ত মনোযোগ বর্তমানের পরিভাষার দিকে দেই, অর্থাৎ যদি আমরা আধুনিক সাহিত্যে নিজেদের একচেটিয়াভাবে উৎসর্গ করি তাহলে ঐটাই বলতে হবে যে, আমরা মনে করি শুধুমাত্র নিজেকে পুনরাবৃত্তি করার মাধ্যমে পৃথিবী এগিয়ে যাচ্ছে। উভয়ক্ষেত্রে আমরা নিজেদেরকে প্রতারিত করতে পারি , এবং আরো গুরুত্বপূর্ণ যা ঘটে তা হলো অন্যকে ধোঁকা দেওয়া। তাই এটি যুক্তিযুক্ত যে, আমাদের নিজেদের স্বার্থে এবং ব্যক্তিগত চিত্তবিনোদনের বিবেচনার বাইরে আমরা সময়ে সময়ে আমাদের জাতীয় সাহিত্যের একটি নির্দিষ্ট পরিমাণ নিয়ে কাজ করি যা সমস্ত সময়কাল ধরে চিত্রায়িত হয়। আমি সব যুগের কথা বলি কারণ মানুষ যা লিখেছিল তা পড়লেই বোঝা যায় পুরোনো জিনিসগুলির মধ্যে সেরাটি কতটা আধুনিক।

উইলিয়াম ফকনার

সবকিছু পড়ুন—ছাইপাঁশ, ক্লাসিক, ভাল ও মন্দ, এবং দেখুন এগুলো কেমন লাগে। একজন ছুতারের মতো যে শিক্ষানবীশ হিসেবে কাজ করে এবং গুরুর কাছ থেকে পাঠ গ্রহণ করে। পড়ুন! এটাতে লীন হবেন। তারপর লিখুন। যদি এটি ভালো হয় আপনি পথ খুঁজে পাবেন।

কার্ট ভনেগার্ট

আমি বিশ্বাস করি যে, এখন পর্যন্ত খুঁজে পাওয়া চিন্তনের সবচেয়ে পুষ্টিকর রূপ হলো বই পড়া এবং লেখা। ইতিহাসে সবচেয়ে আকর্ষণীয় মনের অধিকারীদের লেখা পড়বার সময় তাদের মনের সঙ্গে মিলে আমাদের মনটিও একই ধ্যানে মগ্ন হয়। এটি আমার কাছে একটি অলৌকিক ঘটনা।

হারুকি মুরাকামি

আমি মনে করি উচ্চাকাঙ্ক্ষী ঔপন্যাসিকের প্রথম কাজ হলো প্রচুর উপন্যাস পড়া। এই ধরনের সাধারণ পর্যবেক্ষণ দিয়ে শুরু করার জন্য আমি দুঃখিত, কিন্তু আর কোন তালিম বা প্রশিক্ষণ এর চেয়ে গুরুত্বপূর্ণ না। একটি উপন্যাস লিখতে হলে আপনাকে প্রথমে শারীরিক কাঠামোগত স্তরে বুঝতে হবে, কিভাবে একজন এটিকে একত্রিত করে। এই সময়টায় আপনি এখনো কম বয়সী থাকলে আপনার জন্য বিশেষভাবে গুরত্বপূর্ণ হচ্ছে যতগুলি সম্ভব উপন্যাস চষে বেড়ানো। যা কিছু আপনার হাতে আসতে পারে, মহান উপন্যাস, মোটামুটি মানের উপন্যাস, বাজে উপন্যাস যতক্ষণ আপনি পড়তে থাকবেন এসব কোন ব্যাপারই না। আপনার পক্ষে যত সংখ্যক গল্প সম্ভব হয় ততগুলো গল্প আপদমস্তস্ক শুষে নিন। নিজেকে পরিচিত করান বহু মহান লেখনীর সাথে। আবার অনেক মাঝারি মানের লেখাকেও জানুন। এটাই আপনার জন্য সবচেয়ে জরুরী কাজ।

স্টিফেন কিং

পড়ার আসল গুরুত্ব হলো এটি লেখার প্রক্রিয়ার সাথে স্বাচ্ছন্দ্য এবং ঘনিষ্ঠতা তৈরি করে। লেখার জগতে আপনার নিজস্বতা আর পরিচয় নির্মাণে সাহায্য করে। নিয়মিত পড়া আপনাকে একটি জায়গায় নিয়ে যাবে। যেখানে আপনি উদ্দীপনা সহকারে কোন লজ্জা ছাড়াই নিঃসংকোচে লিখতে পারবেন। এটি আপনাকে লেখার পাতায় কী করা হয়েছে, কী করা হয়নি, কী গতানুগতিক আর কোনটা নতুন এবং কোনটা কাজ করে আর কোনটা মৃতপ্রায় বা বাতিল হয়ে গেছে সে সম্পর্কে একটি ক্রমবর্ধমান জ্ঞান দেয়। আপনি যত বেশি পড়বেন, আপনার কলম বা ওয়ার্ড প্রসেসর দিয়ে নিজেকে বোকা প্রমাণিত করার সম্ভাবনা তত কমবে। ‘অনেক অনেক পড়ুন, অনেক কিছু লিখুন’ এটিই এক ঐশ্বরিক আদেশ।

হোর্হে লুইস বোর্হেস

একটি বই একই মৌখিক কাঠামো বা মৌখিক কাঠামোর একটি অনুক্রম থেকেও বেশি। এটি তার পাঠকের সাথে যে কথোপকথন স্থাপন করে এবং এটি তার কন্ঠে যে স্বর চাপিয়ে দেয়, এটি তার স্মৃতিতে যে পরিবর্তনশীল এবং স্থায়ী চিত্রগুলি রেখে যায় তা হলো একটি বই। বই বিচ্ছিন্ন কোন বস্তু নয়। এটি হচ্ছে একটি সম্পর্ক, অগণিত সম্পর্কের একটি অক্ষদন্ড।

রে ব্র্যাডবেরি

বইয়ের ভেতর যা আছে সেটাই জাদুকরী ব্যাপার। বই আমাদের দেখায় কিভাবে মহাবিশ্বের টুকরোগুলিকে একত্রিত করে একটি পোষাকে সেলাই করা যায়। একটি সংস্কৃতিকে ধ্বংস করার জন্য আপনাকে বই পোড়াতে হবে না। কেবলমাত্র সেই সংস্কৃতির মানুষের বই পড়া বন্ধ করতে হবে।

জে ডি স্যালিঞ্জার

একটি ব্যাপার আমাকে সত্যি হতভম্ব করে, আপনি যখনই একটি বই পড়া শেষ করলেন আপনার মনে হতে পারে যিনি বইটি লিখেছেন সেই লেখক আপনার একজন দুর্দান্ত বন্ধু ছিলেন। আপনি চাইলে তাকে ফোন কল করতে পারেন যখনই আপনার মন চায়। যদিও এটা খুব একটা ঘটে না।

হারপার লি

হারিয়ে ফেলার ভয় না হওয়া পর্যন্ত আমি কখনই পড়তে পছন্দ করিনি। শ্বাস প্রশ্বাস কেউ ভালোবাসে না।

মর্টিমার জে এডলার

ভালো বইয়ের ক্ষেত্রে, মূল প্রশ্নটি হলো আপনি কতগুলো পড়তে পারেন তা নয়, বরং সেগুলির মধ্যে কতগুলো আপনি বুঝতে পারেন।

ডেভিড ফস্টার ওয়ালেস

আমার পছন্দের একজন শিক্ষক ছিলেন যিনি বলেছিলেন যে একটি ভাল উপন্যাসের কাজ হল অস্থির মানুষকে সান্ত্বনা দেওয়া এবং আরামপ্রিয় লোকদের বিরক্ত করা। আমি মনে করি সিরিয়াস ফিকশনের একটি বড় অংশ পাঠককে এমন কিছু দেয় যার সাথে আমরা সকলেই জড়িয়ে থাকি। তার নিজের মাথার খুলির ভেতর অন্যদের কল্পনাপ্রসূত প্রবেশাধিকার দেয়। যেহেতু একজন মানুষ হওয়ার একটি অনিবার্য অংশ হলো কষ্টভোগ, তাই আমরা যে কারণে শিল্পে আসি তার একটা দিক হলো দুঃখের অভিজ্ঞতা, মূলত একটি দুষ্ট অভিজ্ঞতা, এক ধরনের ” কষ্টের স্বাভাবিকীকরণ”। এটা কি কোন চেতনা তৈরী করে? বাস্তব জগতে আমরা সবাই একাই কষ্ট পাই; সত্যিকারের সহানুভূতি পাওয়া অসম্ভব। কিন্তু যদি কল্পকাহিনীর একটি অংশ আমাদের কল্পনাগতভাবে একটি চরিত্রের ব্যথাকে অনুভব করতে দেয়, আমরা আরও সহজে কল্পনা করতে পারি যে অন্যরাও আমাদেরটা অনুভব করছে। এটি সুবিধাজনক, মুক্তিদায়ক; ভিতরে ভিতরে আমাদের একাকীত্বটা লাঘব হয়। এটা হয়তো খুব সহজেই হতে পারে। কিন্তু এখন বুঝতে পারছেন যে টিভি এবং জনপ্রিয় ফিল্মগুলি বেশিরভাগই এক ধরনের নিম্ন মানের শিল্প- অর্থাৎ শুধু মাত্র এমন শিল্প যার প্রাথমিক উদ্দেশ্য অর্থ উপার্জন করা। সুনির্দিষ্টভাবে লাভজনক কারণ এটি বুঝে গেছে দর্শকরা বাস্তবতার চেয়ে শতভাগ আনন্দ পছন্দ করেন। যার মধ্যে ৪৯ শতাংশ আনন্দ আর ৫১ শতাংশ বেদনা। যেখানে ‘সিরিয়াস’ শিল্প যার প্রাথমিক উদ্দেশ্য আপনার কাছ থেকে অর্থ আদায় করা নয়, বরং এটি আপনাকে একটি অস্বস্তিকর অবস্থায় নিয়ে যাওয়ার জন্য উপযুক্ত। এর আনন্দগুলির কাছে পৌঁছানোর জন্য আপনাকে কঠোর পরিশ্রম করতে বাধ্য করে। ঠিক বাস্তব জীবনের মতোই একইভাবে সাধারণত প্রকৃত সুখ কঠোর পরিশ্রম ও কষ্টের ফলাফল।

তাই একজন শিল্প অনুরাগী বিশেষ করে কম বয়সীর জন্য শিল্পকে অনায়াসে শতভাগ উপভোগ করার আশা নিয়ে যিনি বেড়ে উঠেছেন তার জন্য সিরিয়াস ফিকশন পাঠ করা এবং প্রশংসা করা কঠিন। ব্যাপ্যারটা মোটেও ভালো নয়। সমস্যাটি এই নয় যে আজকের পাঠক ‘বোবা’, আমি এমনটি মনে করি না। কেবলমাত্র টিভি এবং বাণিজ্যিক ধারার শিল্প সংস্কৃতি এটিকে তার প্রত্যাশার দিক থেকে অলস আর শিশুসুলভ হবার প্রশিক্ষণ দিয়েছে। কিন্তু এটি আজকের পাঠকদের কাল্পনিক শক্তি এবং বুদ্ধিবৃত্তিকভাবে সক্রিয় হবার চেষ্টাটাকে নজিরবিহীনভাবে কঠিন করে তোলে।

ওরহান পামুক

আমি একদিন একটি বই পড়লাম এবং আমার পুরো জীবনটাই বদলে গেল। এমনকি প্রথম পৃষ্ঠায় বইটির তীব্রতায় আমি এতটাই অনুপ্রাণিত হয়েছিলাম যে আমি অনুভব করেছি যে আমার শরীর ভেঙে পড়েছে। বইটি আমার সামনে একটি টেবিলে রাখা ছিল। আমি যে চেয়ারে বসে বইটি পড়ছিলাম সেখান থেকে সরে গিয়েছিলাম। কিন্তু যদিও আমি অনুভব করেছি যে আমার শরীর ভেঙে পড়ছে, আমার সমস্ত সত্তা টেবিলে এতই একতাবদ্ধ ছিল যে বইটি কেবল আমার আত্মায় নয়, আমার পরিচয়ের প্রতিটি দিকের উপর প্রভাব ফেলেছিল। এটি এমন একটি শক্তিশালী প্রভাব ছিল যে পাতাগুলি থেকে ঠিকরে আসা আলোর ঢেউয়ে আমার মুখমন্ডল আলোকিত হয়ে উঠেছিল। এর উষ্ণতা আমার বুদ্ধিকে চমকে দিয়েছে। কিন্তু এটি উজ্জ্বল স্বচ্ছতাও দিয়েছে। এমন ধরনের আলো ছিল যার মধ্যে আমি নিজেকে পুনর্নির্মাণ করতে পারি। আমি এই আলোতে আমার পথ হারাতে পারি। আমি ইতিমধ্যে আলোর ছায়া সম্পর্কে সচেতন ছিলাম। এমন একটি অস্তিত্ব সম্পর্কে যাকে আমি এখনও জানতে পারিনি এবং আলিঙ্গন করতে পারিনি। আমি টেবিলে বসে পৃষ্ঠাগুলি উল্টাচ্ছিলাম, আমার মস্তিষ্ক এতটুকু সচেতন ছিল যে আমি পড়ছি। আমি প্রতিটি নতুন পৃষ্ঠায় নতুন শব্দ পড়ছি, আমার পুরো জীবন বদলে যাচ্ছে। আমার সাথে যা ঘটতে চলেছে তার জন্য আমি এতটাই অপ্রস্তুত বোধ করছিলাম, এবং এতটাই অসহায় যে কিছুক্ষণ পরে আমি সহজাতভাবে মুখ ফিরিয়ে নিলাম, যেন পাতা থেকে নির্গত শক্তি থেকে নিজেকে রক্ষা করছি। এটা এরকম সাংঘাতিক ছিল যে আমি আমার চারপাশের বিশ্বের সম্পূর্ণ পরিবর্তন সম্পর্কে সচেতন হয়েছিলাম। আমি একাকীত্বের অনুভূতির কাছে পরাস্ত হয়েছিলাম যা আমি আগে কখনও অনুভব করিনি – যেন আমি এমন একটি দেশে আটকা পড়েছিলাম যেখানকার কিছুই আমি জানতাম না। না দেশ না ভাষা রীতিনীতিও না।

পাবলো অস্টার

পড়া ছিল আমার পরিত্রাণ এবং আমার স্বস্তি, আমার সান্ত্বনা, আমার প্রিয় উদ্দীপক। এর কাছ থাকা বিশুদ্ধ আনন্দ পাওয়ার জন্য পড়া। যখন একজন লেখকের কথা আপনার মনের ভেতর প্রতিধ্বনিত হয় তখন আপনার চারপাশে ঘিরে থাকা সেই মোহনীয় নিস্তব্ধতার জন্য আপনি পড়ুন।

ডেভিড উলিন

এখানেই পাঠ, প্রকৃত পাঠ আসে – কারণ এটি সময়ের একটি অংশের দাবি করে, কারণ এটি তাত্ক্ষণিকতার আদিমতা থেকে আমাদের ফিরিয়ে এনে আমাদের কাছে আরও মৌলিক উপায়ে সময়কে পুনরুদ্ধার করে। বর্তমান মুহূর্তে থেকে একটা বই পড়া সম্ভব না কারণ একটা বইয়ে একসাথে অনেক মুহূর্ত বিদ্যমান”।

মার্ক এমন্ডসন

চলতি রীতিনীতির মাঝে যা অনুপস্থিত তা হলো আশার অনুভূতি যখন আমরা বৃহত্তর কাজগুলির মুখোমুখি হই। আশাটি হোল এই যে আমরা বিশ্ব সম্পর্কে জানি না এমন কিছু তারা আমাদের বলবে, অথবা আমাদেরকে উপলব্ধি করার সম্পূর্ণ নতুন উপায় বাতলে দেবে। আমাদের জন্য শুধুমাত্র বই পড়তে জানাটা একমাত্র প্রয়োজন নয় বরং বইয়ের মাধ্যমে নিজেকে পঠিত হবার অনুমোদনও আমাদের দিতে হবে।

জন গ্রীন

কখনও কখনও, আপনি একটি বই পড়েন এবং এটি আপনাকে এই অদ্ভুত আধ্যাত্মিক উৎসাহে পূর্ণ করে, এবং আপনি নিশ্চিত হন যে প্রতিটি জীবিত মানুষ বইটি না পড়লে বিচ্ছিন্ন পৃথিবী কখনই একত্রিত হবে না।

অ্যানি ডিলার্ড

তিনি বই পড়েন যেমন বাতাসে কেউ শ্বাস নেয়, নিজেকে পূরণ করতে এবং বাঁচতে। তিনি এমনভাবে বই পড়েন যেন তিনি ইথারে নিঃশ্বাস নিচ্ছেন, কেবল তাতে ডুবে মরতে।

জয়েস ক্যারল ওটস

পঠনই একমাত্র উপায় যার মাধ্যমে আমরা অনিচ্ছাকৃতভাবে, প্রায়শই নিরুপায় হয়ে, অন্য ব্যক্তির ত্বকে, অন্য ব্যক্তির কণ্ঠে, অন্য ব্যক্তির আত্মায় ছিটকে চলে যাই।

এই নিবন্ধে বিদেশি পত্রিকার তথ্যসূত্র ব্যবহৃত হয়েছে

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Shopping Cart